আবুল হাশেম, বাঘা রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবকে সামনে রেখে স্থানীয় মৃৎ শিল্পীরা দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে।মৃৎ শিল্পীরা দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রতিমা বানানোর কাজ করে যাচ্ছে যথাসময়ে প্রতিমা সাজিয়ে পূজারীদের হাতে তুলে দিতে। শারদীয় দুর্গাপুজা হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব।
প্রতিবছর শরৎ ঋতুতে অনুষ্ঠিত হয় এবং পূজা উদযাপন প্রস্তুতি ব্যাপক আগে থেকেই নেওয়া হয়। আগামী ৬ অক্টোবর শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ইতিমধ্যে বাঘা উপজেলার সকল মন্ডপ পূজা উদযাপন প্রস্তুতি শেষ করেছেন। ১১ অক্টোবর বোধন শেষে ষষ্ঠী পূজা এবং আগামী ১৫ অক্টোবর শুভ বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। সরেজমিনে, বাঘা উপজেলার বিভিন্ন প্রতিমা কারিগর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির মূল উপাদান আঠালো মাটি ও বাশঁ-খড় সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে।
বাংলাদেশ পূজা উৎযাপন বাঘা শাখা সূত্রে জানা যায়,গত বছর উপজেলায় ৩৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ বছর গত বছরের চেয়ে ৫টি বৃদ্ধি পেয়ে পুরো উপজেলায় মোট ৪৪ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা যায়। প্রতিমা শিল্পী গণেশ কুমার মালাকর বলেন, এবার বাঘা, বনপাড়া,বড়াইগ্রাম,কুষ্টিয়ার (তারাগুনি বাজার) সহ মোট ৩৫ টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেয়েছি এবং আমার ৮ জন সহকর্মীরা দিন-রাত মিলিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ করে যাচ্ছি। মূল্য সম্পর্কে জানায়, প্রতি প্রতিমার আকার ও সাজসজ্জা অনুযায়ী পারিশ্রমিক নির্ধারণ হয়।
বলিহার উত্তর পাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির কমিটির সম্পাদক বিধান চন্দ্র সরকার জানায়, প্রথমেই দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলিহার হিন্দু-সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে শারদিয়া শুভেচ্ছা জানাই। আমরা ১৯৭১ সাল থেকে এ পূজা মন্ডপে পূজা উৎযাপন করে আসছি। প্রায় ১ মাস আগেই প্রতিমা বানিয়েছি এবং ইতিমধ্যে পূজা উদযাপনের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছি।বাঘা প্রশাসন থেকে সকল সহযোগিতা আমরা পেয়েছি ও যথেষ্ট নিরাপত্তা বিদ্যমান রয়েছে। আমরা দেবী মা দুর্গাকে বরণ করতে আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি। প্রতিবারের মতো এবারো মা দুর্গা অবতীর্ণ হয়ে অশুভ শক্তি নাশ করে মঙ্গল প্রতিষ্ঠা করবেন। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বাঘা শাখার সাধারন সম্পাদক অপূর্ব কুমার সাহা বলেন, গত বছর থেকে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে আগের মত মহাউৎসবে শারদীয় দুর্গা উৎসব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি উপজেলার সকল মন্দিরের কমিটির উদ্দেশ্য করে বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় মাস্ক পড়ার কোন বিকল্প নেই। তাই উপজেলার প্রতিটি মন্দিরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরার আহ্বান জানান।
এ ব্যাপারে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, সকল ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাঘা থানা পুলিশ তৎপর। ইতিমধ্যে সাদা পোশাক ও ইউনিফ্রম পরে উপজেলার প্রতিটি মন্দিরে নজর রাখছে। আশা করি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। এবছরে স্থায়ী ভাবে প্রতিটি মন্দিরে পুলিশ থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখনও কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না । আগামি ৩ অক্টোবর পুলিশ সুপারের মিটিং এর পরে জানানো যাবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।